কয়েকদিন আগে জাকারবার্গ ফেসবুকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানালো ভেরিফায়েড চেকমার্ক দেখানোর জন্য পয়সা দিতে হবে। কম্পানির অবস্থা এতই খারাপ যাচ্ছে যে এরকম সাবস্ক্রিপশন সার্ভিস চালু না করলে ব্যবসা গুটাতে হবে। মেটাভার্সে সাড়ে তিনশ কোটি টাকার উপরে বিনিয়োগ করে রিটার্ন একেবারে শূণ্য। সম্প্রতি স্টক প্রাইস পড়ে যাওয়ার দিক থেকেও মেটা সবার থেকে যোজন যোজন দূরত্বে এগিয়ে। কয়েক মাস আগে ১১ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের পরও কম্পানি লাটে উঠে যাওয়ার অবস্থা। সেদিন খবর দেখলাম আরও ছাঁটাই করবে। সুতরাং এ দুঃসময়ে এইরকম ডেসপারেট মুভ অনাকাঙ্ক্ষিত না। এতে অবশ্য আম-পাবলিকের কিছু আসবে যাবে না। সমস্যাটা হবে তথাকথিত “ইনফ্লুয়েন্সার”-দের। ওদের কারও কারও রুটি-রুজি চলে এই কম্পানির প্ল্যাটফর্ম দিয়ে। অনেকে কোটিপতিও হয়ে গেছেন। সুতরাং, ব্যবসার খাতিরে এতটুকু ইনভেস্টমেন্ট না করলেই নয়।
সেদিন এক পুরনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা। বললো ফেসবুকে আমাকে একদমই দেখা যায় না, আমি নাকি নেটওয়ার্কের বাইরে। ভেবে দেখলাম তাই তো! ফেসবুকিং আমার কাছে একরকম টয়লেটে যাওয়ার মতো। পরিবেশ মনোরম নয়, তবু চাপ বেশি এলে যেতেই হয়। গিয়ে কিছু ল্যাদা ছেড়ে দিয়ে চুপচাপ চলে আসি। বাকিটা অন্যদের সমস্যা।
সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার কমানো শুরু করেছি আসলে অনেকদিন হলো, তা-ও প্রায় বছর পাঁচেক হবে। বহুদিন থেকেই ভেবে আসছিলাম কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি কমানো যায়। শুরুটা অ্যান্ড্রয়েডের ডিজিটাল ওয়েলবিয়িং অ্যাপ থেকে। পিক্সেল ইউজার হওয়ার সুবাদে এই ফিচারটা আগেভাগেই পাই। ডিজিটাল ওয়েলবিয়িং দিয়ে বিভিন্ন থার্ড-পার্টি অ্যাপলিকেশনে টাইমার সেট করে রাখা যায়। টাইমারের সময় পার হয়ে গেলেই অ্যাপ বন্ধ।
তো এভাবেই ফেসবুকের টাইমার সেট করেছিলাম ৩০ মিনিট। প্রথমদিনের কথা। মাত্র কয়েকবার স্ক্রল করে দুয়েকটা পোস্টে চোখ বুলিয়ে মাত্র আরাম করে বসেছি। ওয়ার্ম আপ শেষ, এবারে শুরু করা যাক, হঠাৎ দেখি নোটিফিকেশন — এক মিনিট পর অ্যাপ বন্ধ হয়ে যাবে! ভাবলাম ভুল টাইমার সেট করেছি। চেক করে দেখি ইতোমধ্যে ২৯ মিনিট হাওয়া!
এভাবে আরও দিন দুয়েক গেলে পরে বুঝলাম আসলে এসব অ্যাপে একবার ঢুকলে সময়ের হিসাব থাকে না। প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা, কখনো কখনো আরও বেশি সময় কেটে যায় এসব অ্যাপে। বাঘা বাঘা সাইকোলজিস্ট আর UI/UX ডিজাইনারদের দিয়ে এসব অ্যাপ বানানো। আর আছে অ্যালগরিদম। এগুলো দিয়ে আমাদেরকে সাইকোলজিক্যালি আক্ষরিক অর্থেই হ্যাক করে ব্যবসা করছে এসব কম্পানি। আমরা মনে করছি আমার কর্মকাণ্ড সব আমার নিয়ন্ত্রণে। আমার যখন ভালো লাগছে আমি ফেসবুকিং করছি, যখন ভালো লাগছে না, তখন করছি না। কিন্তু ব্যাপারটা আদতে তা না। আমরা আসলে ওই ল্যাবের ইঁদুর বা গিনিপিগগুলোর মতো — একটু একটু করে সুস্বাদু খাবার দিচ্ছে, আমরাও একটু একটু করে চেটে দিচ্ছি। এভাবে কোন একসময় নেশায় পড়ে গিয়ে এমন একটা অবস্থায় চলে যাচ্ছি, যেখানে আমার ইচ্ছার উপর আসলে আমার নিয়ন্ত্রণ থাকে না, নিয়ন্ত্রণ চলে যায় অ্যালগরিদমের কাছে।
২০০৬ সালে এজা রাসকিন উদ্ভাবন করেন ইনফিনিট স্ক্রলিং। আপনার কাজ শুধু কম্পিউটার বা ফোনের স্ক্রিনে স্ক্রল করে যাওয়া, কন্টেন্ট শেষ হবে না। এর সঙ্গে আছে ক্যাশিং নামের আরেকটা পদ্ধতি, আগে থেকেই কিছু কন্টেন্ট ফোনে লোড করে রাখা যাতে করে এমনকি ইন্টারনেট না থাকলেও অ্যাপে ঢুকলে আপনি কিছু না কিছু দেখতে পাবেন। ফলে অ্যাপ থেকে আপনি তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসবেন না।
এর সঙ্গে আছে গেমিফিকেশন। খেলাধুলার স্কোরিং-এর মতোই পোস্টের লাইক-কমেন্টগুলো আপনাকে ডোপামিন হিট দেয়, যাকে বলে instant gratification, আপনাকে উৎসাহিত করে আরও পোস্ট করতে। এরপর আপনি চিন্তা করবেন অ্যালগরিদমকেই হ্যাক করতে, যাতে করে আরও ভিউ বাড়ে, আরও লাইক পাওয়া যায়। বাজারে কাটতি বেশি, এমন জিনিস পোস্ট করতে আপনি উৎসাহিত হবেন। এভাবে টুর্নামেন্টের সিঁড়ি বেয়ে লেভেল আপ করতে করতে একদিন সেলেব্রিটি ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করবেন। সে অবশ্য অন্য প্রসঙ্গ, আরেকদিন আলোচনা হবে। যা বলছিলাম, ইনিফিট স্ক্রলিং-এর উদ্দেশ্য ছিলো ইউজার এক্সপেরিয়েন্সকে উন্নত করা। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া এটার পাশাপাশি আরও নানা কায়দা-কৌশল ব্যবহার করছে ব্যবহারকারীকে যতক্ষণ সম্ভব অ্যাপে আটকে রাখা যায় নিশ্চিত করতে। কিন্তু কেন?
মেটা বা ফেসবুকের প্রধান ব্যবসাই হচ্ছে বিজ্ঞাপন। অ্যাডভার্টাইজাররা বিভিন্ন ডেমগ্রাফিকে টার্গেট করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেয়। যেমন ধরুন কোন একটা নির্দিষ্ট এলাকায় নির্দিষ্ট বয়সের নির্দিষ্ট পেশার এবং নির্দিষ্ট কোন শখ আছে এমন মানুষের কাছে আপনি একটা পণ্য বেচতে চেয়ে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিবেন। ফেসবুকের কাজ সেই অ্যাড সঠিক সময়ে সঠিক মানুষটার কাছে প্রদর্শন করা। এই সঠিক মানুষকে চিনতেও কেরামতির কমতি নেই।
এরা আপনার প্রতিটা খুঁটিনাটি কর্মকাণ্ডের অ্যানালিটিক্স ডেটা সংগ্রহ করে। আপনি নিজে তো অনেক তথ্য দিচ্ছেনই, এই যেমন বয়স, পড়াশোনা, স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটি, চাকরির তথ্য ইত্যাদি। তার সঙ্গে আছে আপনার ফ্রেন্ডলিস্টের লোকজন এবং তাদের তথ্য। আপনার ভৌগলিক অবস্থান, আপনি কোন পেইজে বেশি যাচ্ছেন, কী পোস্ট সময় নিয়ে পড়ছেন, কোন ভিডিও কতক্ষণ দেখছেন, কার পোস্টে আপনি ❤️ ছাড়া রিয়্যাক্ট দেন না, কার সঙ্গে আপনার দহরম-মহরম, ইত্যাদি অসংখ্য ডেটা পয়েন্ট থেকে ওরা আপনার একটা মডেল তৈরি করছে। এই মডেল এতটাই নিখুঁত যে কখনো কখনো আপনি কী ভাবছেন, সেটা পর্যন্ত ভবিষ্যদ্বানী করতে পারে। কখনো কি খেয়াল করেছেন আপনি হয়ত একটা বিষয় নিয়ে ভাবছেন বা বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেছেনে কিছু একটা নিয়ে। মিনিট পাঁচেক পর ফেসবুকে গেলেন আর দেখলেন সেই জিনিসের বিজ্ঞাপন। এর কারণ আপনি আপনার নিজেকে যতটুকু চেনেন, ফেসবুক আপনাকে চেনে তার থেকেও বেশি। আপনি যত বেশি ব্যবহার করবেন, ততই সে আপনাকে ভালোভাবে চিনবে। আপনাকে যত ভালোভাবে চিনবে, আপনাকে প্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপনও দেখাবে তত ভালো। যত বেশি টার্গেটেড বিজ্ঞাপন আপনাকে দেখাতে পারবে, ততই ওর লাভ। আপনার ব্যক্তিগত তথ্যই হচ্ছে ওর ব্যবসার মূলধন। আপনিই আসলে পণ্য, আপনাকে বেচেই আজ ওরা ট্রিলিয়ন ডলার কম্পানি। থাক, প্রাইভেসির কথা নাহয় বাদ দিই আজকে।

মেটা, গুগল, এরা হচ্ছে হচ্ছে পাবলিকলি ট্রেইডেড শেয়ারহোল্ডার-ড্রিভেন কম্পানি। মুনাফা বৃদ্ধিই ওদের ব্যবসার মূল লক্ষ্য। আর তার খাতিরে আইনত অবৈধ্য নয় এমন হেন কাজ নেই যা ওরা করে না। অনেক ক্ষেত্রেই এরা এথিক্সের ধার ধারে না। আপনার অনলাইন কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করে যে আপনাকে পার্সোনালাইজ্ড কন্টেন্ট দেখাবে, তা-ও কিন্তু না। আগেই বলেছি আপনাকে অ্যাপে আটকে রাখা মানেই পয়সা, আর তাই ওদের অ্যালগরিদম আপনাকে এমন জিনিস দেখাবে যেটাতে এই “এনগেজমেন্ট” বাড়ে। এখানেও আছে সমস্যা, স্পাইয়িং-এর চাইতে যেটা কোন অংশে কম না।
বিতর্কিত জিনিসে মানুষের আকর্ষণ বেশি, আলাপ-আলোচনাও বেশি। এজন্য প্রচুর মিসইনফর্মেশন, অপবিজ্ঞান, রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা খাওয়ানো হয় আপনাকে। আপনাকে এমন জিনিস দেখাবে যেটা দেখে হয়ত মেজাজ চড়ে যাবে, গিয়ে একটু গালমন্দ করে আসবেন। অথবা কোন পোস্ট আপনার কগনিটিভ বায়াসের সঙ্গে মিলে যাবে, ফলে লাইক দিবেন, শেয়ার করবেন, ইত্যাদি। আর তাই হাম্বাদিক ইলিয়াস আর বামাতি পিনাকীর ভিডিও দেখা যায় মূর্খ মোল্লার ওয়াজের কয়েকটা ভিডিও স্ক্রল করার পর — নিজের অভিজ্ঞতা বললাম, আপনাদের কথা জানি না। আমি কিন্তু এদের কাউকেই ফলো করি না। এই কিছুদিন আগেই পাঠ্যবইয়ে বিবর্তনবাদ পড়ানোর ইশ্যুতে পক্ষে কারও লেখা চোখে পড়েনি, অথচ বিপক্ষে বন্ধুবান্ধব থেকে শুরু করে মিম পেজের পোস্ট আর উপরোক্ত দুই শার্লাটানের ভিডিও দেখলাম অনেক। বহু ক্ষেত্রে মিসইনফর্মেশনের কথা জেনেশুনেই এগুলোকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। আপনি ভাবেন এভাবেই চলছে দেশ ও দুনিয়া। কিন্তু আসলে বাস্তবতা না, অ্যালগরিদম আপনাকে যেটা দেখাচ্ছে, সেটাই দেখছেন আপনি।
শুরুতে ফেসবুক ছিলো সোশ্যাল মিডিয়া। বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগই ছিলো মূল উদ্দেশ্য। মতামত, ভাবনা, এগুলো যেমন শেয়ার করা যেত নিজের ওয়ালে, বিভিন্ন গ্রুপে ফোরামের মতো ডিসকাশন বোর্ডও ছিল। লেখালেখি করার জন্য ছিলো নোট্স নামে একটা ফিচার। ফলে এটা-সেটা নিয়ে নানান আলোচনা করা যেত সমমনা-অসমমনা সবার সঙ্গে। যার ওসবের সময় নেই, সে অন্তত বন্ধুবান্ধবের হালচাল দেখতে পেত কিংবা সমসাময়িক ঘটনার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল হতো। কিন্তু এসব এখন অতীত। সময়ের সাথে সাথে স্ট্র্যাটেজি বদলেছে। মানুষ এখন বিনোদনের জন্য টিভি দেখে না। বিনোদন পেতে যায় ফেসবুকে, টিকটকে। ফেসবুক এখন আর সেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি নেই, এটা এখন টিকটকের ক্লোন, মানুষ যায় এখানে ফ্রি-তে মনোরঞ্জনের জন্য। অ্যাপের হোম ফিডে বন্ধুবান্ধবের পোস্ট দেখার আগে চোখে পড়ে কতগুলো বিজ্ঞাপন, শর্ট ফর্ম ভিডিও, আর কিছু র্যানডম পেজ থেকে পোস্ট করা মিম (এসব পেজকে এমনকি ফলো পর্যন্ত করি না)। গুরুত্বপূর্ণ কিছু চোখে পড়ার আগে প্রচুর স্ক্রল করতে হয় — এটাও একধরণের চালাকি যাতে আপনি অ্যাপে বেশি সময় ব্যয় করেন। দেশের বিশাল অশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর কাছে ইন্টারনেট সস্তা ও সহজলভ্য হওয়ায় পরিবেশ যে দুর্গন্ধময় হয়ে গেছে, সে কথা আর না বলি। মোদ্দা কথা, এই ফালতু অ্যাপে সময় নষ্ট করার মতো সময় আসলে নেই।
এর থেকে উত্তোরণের উপায় কিন্তু ইতোমধ্যেই আছে। W3C ওপেন স্ট্যান্ডার্ডের উপর ভিত্তি করে তৈরি জিরো-ট্র্যাকিং ডিসেন্ট্রালাইজ্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চাইলে আজই ব্যবহার শুরু করে দিতে পারেন। ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ নেই, ইন্ট্রুসিভ অ্যাড নেই, অ্যালগরিদম নেই, ম্যানিপুলেশন নেই। আপনি যাদেরকে ফলো করবেন, শুধু তাদের পোস্টই দেখবেন সময়ের ক্রমানুসারে। আপনার হাতে সমস্ত নিয়ন্ত্রণ — সময়ের কোন ক্রম অনুসারে দেখবেন, ফলোয়ারদের লিস্ট তৈরি করে শুধু নির্দিষ্ট লিস্টের মানুষজনের পোস্ট দেখা, হ্যাশট্যাগ ফলো করা কিংবা ট্রেন্ডিং পোস্ট দেখা, ইত্যাদি। কোন কর্পোরেশন নিয়ন্ত্রণ করবে না আপনি কী দেখবেন, কী শুনবেন, বা কী পড়বেন।
নন-প্রফিট ওপেন স্ট্যান্ডার্ড বলেই এর পেছনে বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নেই, মার্কেটিং নেই, অ্যাড নেই। আর তাই সাধারণ মানুষ এগুলোর ব্যাপারে খুব বেশি জানে না। কেবল গুটিকয়েক tech savvy বা nerd কিসিমের মানুষই এগুলো ব্যবহার করে আসছে। এসব সার্ভিসের কথা ছড়ায় মূলত word-of-mouth মার্কেটিং-এ। এজন্য এসবের অ্যাডপশন রেইট খুব মন্থর এবং নেটওয়ার্ক ইফেক্টও অতটা শক্তিশালী না। আর এ কারণেই এসব নিয়ে লেখা — টেক লাইনের লোক হওয়ায় আমাদের উপরও কিছু দায়িত্ব বর্তায় জনসাধারণকে দিকনির্দেশনা দেয়ার। এগুলো নিয়ে পরে আরও লিখবো আশা রাখি।
সঠিক পণ্য খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে আমার একটা ট্রিক শেয়ার করে আপাতত শেষ করছি — পুরোপুরি ব্যক্তিগত অভিমত, ডেটা দেখতে চাহিয়া লজ্জা দিবেন না। যে পণ্যের বিজ্ঞাপন সচরাচর দেখতে পান, অধিকাংশ সময়ই তার বেশ কিছু প্রতিদ্বন্দ্বী পণ্য বাজারে পাওয়া যায়। বিজ্ঞাপনগুলো যদি বিগ টেক কর্পোরেশনের হয়ে থাকে, তাহলে বুঝবেন এর পেছনে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করছে ওরা। এর বিপরীতে কিছু ছোট কম্পানি থাকে যাদের প্রফিট করার লক্ষ্য থাকে কম। ওরা বিজ্ঞাপণের পেছনে পয়সা খরচ না করে বরং সার্ভিস বা প্রডাক্টের উন্নতিতে ব্যয় করে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি ওদের প্রপোজিশন বরাবরই বাজারি পণ্যের চেয়ে ভালো, আর এটাই এসব পণ্যের টিকে থাকার নিয়ামক। ভালো বলেই কিছু লোক এগুলো ব্যবহার করে, অনেক ক্ষেত্রে পয়সার বিনিময়ে। কেউ লসে ব্যবসা করতে যায় না। বিজ্ঞাপনে যে খরচ হয়, সেটা তুলে নেয়া হয় ব্যবহারকারীর পকেট থেকেই, যার কারণে পণ্যের যা দাম হওয়া উচিৎ, তার চেয়ে বেশি খরচ করতে হয়। আর পণ্যটা যদি হয় ফ্রি, তাহলে বুঝে নিবেন আপনিই পণ্য, আর আপনার দাম ওই মার্কেটিং-এর খরচের চাইতে ঢের বেশি।

Leave a comment